সংগঠন পরিচিতি
সংগঠন পরিচিতি
নাম
সোনামণি (একটি আদর্শ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন)।
سونامنى (جمعية الأطفال لأهل الحديث)
SONAMONI (AN IDEAL NATIONAL CHILD ORGANIZATION)
পরিচয়
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর শিশু-কিশোর বিভাগ।
প্রতিষ্ঠাকাল ও নামকরণ
আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নে‘মত রাজির মধ্যে অন্যতম সেরা নে‘মত হচ্ছে ফুটন্ত ফুলের মত আমাদের শিশু-কিশোর ছোট্ট ভাই ও বোনেরা। তাদেরকে ইসলামী আদব-কায়দা মোতাবেক গড়ে তোলা সকল অভিভাবকের অপরিহার্য কর্তব্য। উক্ত কর্তব্য বোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিশু-কিশোরদেরকে সঠিক দ্বীনের পথে পরিচালনার নেক নিয়তে ১৯৯৪ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার মারকাযী জামে মসজিদ, নওদাপাড়া, রাজশাহীতে সকাল বেলার অধিবেশনে ‘আন্দোলন’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব পবিত্র কুরআনের সূরা হজ্জের ২৩ ও ২৪ নং আয়াতের আলোকে ‘সোনামণি’র এই সুন্দর ও মাধুর্যময় নামটি ঘোষণা করেন। অধিবেশনে উপস্থিত সকলে অত্যন্ত উৎসাহের সাথে তা সমর্থন করেন এবং ঐ দিন ‘সোনামণি’ সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আয়াত দু’টি নিম্নরূপ-
إِنَّ اللهَ يُدْخِلُ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصَّالِحَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يُحَلَّوْنَ فِيْهَا مِنْ أَسَاوِرَ مِنْ ذَهَبٍ وَّلُؤْلُؤًا وَلِبَاسُهُمْ فِيْهَا حَرِيْرٌ-وَهُدُوْا إِلَى الطَّيِّبِ مِنَ الْقَوْلِ وَهُدُوْا إِلٰى صِرَاطِ الْحَمِيْدِ
অর্থ : ‘যারা ঈমান আনে ও সৎ কর্মসমূহ সম্পাদন করে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তাদেরকে স্বর্ণকংকণ ও মণি-মুক্তা খচিত অলংকারে ভূষিত করা হবে এবং সেখানে তাদের পোষাক হবে রেশমের। বস্তুত (দুনিয়াতে) তারা পরিচালিত হয়েছিল পবিত্র বাক্যের (তাওহীদের) দিকে এবং তারা পরিচালিত হয়েছিল প্রশংসিত পথের (ইসলামের) দিকে (হজ্জ ২২/২৩-২৪)। আমাদের প্রাণপ্রিয় শিশু-কিশোররা যাতে তাওহীদ এবং সুন্নাতে রাসূলের পথে চলে জান্নাতে স্বর্ণ-কংকন ও মণি-মুক্তার অধিকারী হতে পারে, সেই মহান ও পবিত্র আকাক্সক্ষা নিয়ে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সেদিন এই প্রিয় নামটি নির্বাচন করেছিলেন।
কার্যালয়
‘সোনামণি’-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় বর্তমানে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া (আম চত্বর), রাজশাহীতে থাকবে। তবে সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে উপদেষ্টা পরিষদের পরামর্শক্রমে ও ‘আন্দেলন’-এর অনুমোদনক্রমে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেশের অন্যত্র স্থানান্তর করা যাবে।
মনোগ্রাম
সংগঠনের একটি মনোগ্রাম থাকবে (ছহীহুল জামে‘ হা/২৩০৮)।
যার পরিচিতি নিম্নরূপ : (ক) পাঁচটি কোণ দ্বারা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বুঝানো হয়েছে। (খ) মধ্যের উপরিভাগে ‘কালেমা শাহাদাত’-এর প্রচলিত মূল অংশ দ্বারা তাওহীদ ও রিসালাতের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বুঝানো হয়েছে। (গ) মধ্যের চাঁদ দ্বারা ইসলামী নিশান বুঝানো হয়েছে। (ঘ) ত্রিকোণবেষ্টিত ‘আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি’ দ্বারা কিতাব ও সুন্নাতের ভিত্তিতে সার্বিক জীবন পরিচালনার কথা বুঝানো হয়েছে। (ঙ) উপরের তিন দিকে ডবল রেখার বেষ্টনী দ্বারা জামা‘আতবদ্ধ জীবন ও সাংগঠনিক মযবূতী বুঝানো হয়েছে।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইসলামী চেতনা সৃষ্টি এবং তদনুযায়ী জীবন ও সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
মূলমন্ত্র
রাসূলুল্লাহ (ছা.)-এর আদর্শে নিজেকে গড়া।
নীতিবাক্য
পাঁচটি। যথা :
১. সকল অবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করি।
২. রাসূলুল্লাহ (ছা.)-কে সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করি।
৩. নিজেকে সৎ ও চরিত্রবান হিসাবে গড়ে তুলি।
৪. ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ করি।
৫. আদর্শ পরিবার গড়ি এবং দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করি।
সোনামণির গুণাবলী : দশটি
১. জামা‘আতের সাথে আউয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায় করা।
২. দৈনিক বাদ ফজর কমপক্ষে ১৫ মিনিট কুরআন তেলাওয়াত, নিয়মিত পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়ন ও দ্বীনিয়াত শিক্ষা করা।
৩. পিতা-মাতা, শিক্ষক-মুরব্বী, পরিচিত-অপরিচিত সকল মুসলমানকে সালাম দেওয়া ও মুছাফাহা করা এবং মুসলিম-অমুসলিম সকলের সাথে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করা।
৪. ছোটদের স্নেহ ও বড়দের সম্মান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে সুন্দর ব্যবহার করা।
৫. সদা সত্য কথা বলা, সর্বদা ওয়াদা পালন করা ও আমানত রক্ষা করা।
৬. যেকোন শুভ কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করা ও ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে শেষ করা।
৭. মিসওয়াক সহ ওযূ করে ঘুমানো ও ঘুম থেকে উঠে ভালোভাবে মিসওয়াক সহ ওযূ করা এবং প্রত্যহ সকালে উন্মুক্ত বায়ু সেবন ও হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান হওয়া।
৮. সেবা, ভালোবাসা ও আনুগত্যের মাধ্যামে নিজেকে আদর্শবান হিসাবে গড়ে তোলা।
৯. বৃথা তর্ক, ঝগড়া-মারামারি এবং রেডিও-টিভির বাজে অনুষ্ঠান ও অসৎ সঙ্গ এড়িয়ে চলা।
১০. পরস্পরকে হক ও ধৈর্যের উপদেশ দেওয়া এবং সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করা।
কর্মসূচী
চারটি। যথা :
তাবলীগ, তানযীম, তারবিয়াত ও তাজদীদে মিল্লাত। অর্থাৎ প্রচার, সংগঠন, প্রশিক্ষণ ও সমাজ সংস্কার।
সাংগঠনিক স্তর
পাঁচটি। যথা :
১. শাখা ২. এলাকা ৩. উপযেলা ৪. যেলা ৫. কেন্দ্র।
যরূরী জ্ঞাতব্য
(১) সোনামণিদের বয়স সর্বনিম্ন ৭ (সাত) ও সর্বোচ্চ ১৫ (পনের) বছর হবে।
(২) সোনামণি বালক ও বালিকাদের পৃথক ইসলামী লেবাস পরিধান আবশ্যক হবে।
(৩) প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বার্ষিক সোানমণি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সকল স্তরের দায়িত্বশীল ও সোনামাণিরা যোগদান করবেন।
